মোট উপযোগ
বাজারে গিয়ে তুমি খাওয়ার জন্য একাধিক আম কিনতে চাও । একটি নির্দিষ্ট সময়ে ১ম আমটি কিনতে তুমি যে টাকা ব্যয় কর ২য়, ৩য় বা ৪র্থ বার আম ক্রয় করতে তা কর না । কারণ ১ম আমটি ভোগ করার পর তোমার আম খাওয়ার অভাব অনেকটা পূরণ হয়ে যায়। ২য় বার আমের প্রতি তোমার আকাঙ্ক্ষা বা আগ্রহ কমে যায় । ৩য়, ৪র্থ আমের ক্ষেত্রে আগ্রহ আরও কমবে। এমন হতে পারে যে, তুমি আর আম কিনবে না । কারণ আম খাওয়ার প্রতি সে সময়ে তোমার আর কোনো আগ্রহ থাকে না বা তোমার কাছে অতিরিক্ত আমের উপযোগ শূন্য । আম ক্রয় করতে তোমাকে টাকা ব্যয় করতে হয় । ধরি, ১ম আমটি তুমি কিনলে ৫ টাকায়, ২য় আমটি কিনতে তুমি ৪ টাকা দিতে রাজি থাকো, ৩য় আমের জন্য ৩ টাকা দিতে চাও এবং ৪র্থ আমের জন্য ২ টাকা । এভাবে (৫ + 4 + 3 + 2) 1 = ১৪ টাকা দিয়ে তুমি ৪টি আম কিনলে । টাকাকে উপযোগের মাপকাঠি ধরলে এখানে ৪টি আমের মোট উপযোগ ১৪ । অতএব, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি দ্রব্যের বিভিন্ন একক থেকে প্রাপ্ত তৃপ্তির সমষ্টিকে মোট উপযোগ বলে । যেহেতু অতিরিক্ত আম থেকে ক্রমান্বয়ে কম তৃপ্তি পাওয়া যায়, সেহেতু ভোগের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে মোট উপযোগ ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে ।
প্রান্তিক উপযোগ
মনে কর তুমি ৩টি আম কিনেছ । এখন তুমি আবার আরেকটি আম কিনলে । এই অতিরিক্ত ৪র্থ আমটি হলো প্রান্তিক আম । এই প্রান্তিক আম থেকে তুমি যে তৃপ্তি বা উপযোগ পেলে, তাই প্রান্তিক উপযোগ । এই আম কিনতে তুমি ২ টাকা ব্যয় করলে এখানে প্রান্তিক উপযোগ হবে ২ টাকার সমান । অর্থাৎ অতিরিক্ত এক একক দ্রব্য বা সেবা ভোগ করে যে অতিরিক্ত উপযোগ বা তৃপ্তি পাওয়া যায়,তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে ।
উপরের সূচিতে দেখা যায়, ১ম আমের দাম যখন ৫ টাকা প্রান্তিক উপযোগ তখন ৫ টাকা । ২য় আম কেনায় ১ম ও ২য় আমের ব্যয় ৯ টাকা। দুটি আম থেকে প্রাপ্ত মোট উপযোগ ৯ টাকা। ২য় আম থেকে প্রাপ্ত প্রান্তিক উপযোগ ৪ টাকা । এভাবে ৪টি আম থেকে প্রাপ্ত উপযোগ ১৪ । ৪র্থ আমের প্রান্তিক উপযোগ ২ । এভাবে আমের বিভিন্ন একক থেকে প্রান্তিক উপযোগ যথাক্রমে ৫, ৪, ৩, ২, ১, ০ ও ১ টাকা । ৬ষ্ঠ আমটির তোমার কাছে কোনো উপযোগ না থাকায় তুমি তা কিনবে না । আর ৭ম আমটি কিনলে তোমার মোট উপযোগ তখন কমে যাবে, যেহেতু ৭ম আমের প্রান্তিক উপযোগ ঋণাত্মক ।